আমেরিকা , সোমবার, ১৯ মে ২০২৫ , ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বসন্ত উদ্যানের স্বপ্ন নিয়ে ইস্টার্ন মার্কেটে উৎসবমুখর ভিড় মিশিগানের উপজাতিদের আবাসনে ২৬.৫ মিলিয়ন অনুদান এশিয়ান-আমেরিকান সংস্কৃতির রঙিন মেলবন্ধন ওয়ারেনে দেশের ১১ সরকারি প্রাথমিক স্কুলের নাম পরিবর্তন মিশিগানে একদিনে ৬টি টর্নেডো! যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিতে চীনের আধিপত্য কর্মসংস্থানে ট্রাম্পের জোর, সুযোগ দেখছে রোবোটিক শিল্প ডেট্রয়েটে ট্রাফিক স্টপ চলাকালীন গুলি : পুলিশ সদস্য আহত, সন্দেহভাজন নিহত আবারও ঝড়ের শঙ্কা আজ, টর্নেডো ছুঁয়েছে মিশিগান দ্বিতীয় বছরের মতো জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারায় ডেট্রয়েট ফেডারেল স্বাস্থ্য ব্যয় সংকোচনে মিশিগানের ৫ লাখ মানুষ মেডিকেড হারাতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রে মেমোরিয়াল ডে ছুটির ভ্রমণে নতুন রেকর্ডের সম্ভাবনা মিশিগানে টর্নেডো ও ঝড়ের সতর্কতা জারি ঐতিহ্যের ছায়ায় বয়স্কদের জন্য আধুনিক আশ্রয়স্থল হচ্ছে লি প্লাজা ডেট্রয়েটে মাদক ও অস্ত্রের বিরুদ্ধে বড় অভিযান : হাজার হাজার বড়ি ও বন্দুক উদ্ধার আমেরিকা ও কানাডায় ফোর্ডের ৩৫০ সফ্টওয়্যার কর্মী ছাঁটাই সস্তা ইভি ব্যাটারি বানাবে জিএম গর্ভপাতের বিধিনিষেধ বাতিল করেছে মিশিগান আদালত লেক সেন্ট ক্লেয়ার মেট্রোপার্কে কিশোরীকে যৌন নির্যাতন, অভিযুক্ত যুবক ওয়ারেনের সামরিক ঘাঁটিতে আইএসের সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা ব্যর্থ

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ডাক্তার সালেহ ও হীরেন্দ্র রায়কে আমরা যেন ভুলে না যাই

  • আপলোড সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ডাক্তার সালেহ ও হীরেন্দ্র রায়কে আমরা যেন ভুলে না যাই

ছবি : ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদ

হবিগঞ্জ, ২৯ এপ্রিল :  শহীদ ডাক্তার সালেহ উদ্দিন আহমেদ। হবিগন্জ আওয়ামীলীগের প্রাণ পুরুষ ছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে  হবিগন্জ কন্টোরুমের প্রধান দায়িত্ব তিনিই পালন করতেন। অনন্য মেধার অধিকারী ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদ  ছাত্রাবস্থায়ই দেশমাতৃকার টানে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। টকবকে যুবক ছাত্রলীগের তেজস্বী দীপ্তিময় এক নেতা। 

১৯৫৬ সালে হবিগন্জ সরকারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিক এবং ১৯৫৯ সালে সিলেট মুরারীচাঁদ কলেজ থেকে ১ম বিভাগে আই এ পাশ করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এম বি বি এস  পাশ করেন। সরকারী চাকুরী না করে হবিগন্জের মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার মানসে প্রাইভেট চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। তাঁর উদ্যোগেই হবিগন্জে প্রথম স্থাপিত হয় আধুনিক ক্লিনিক।  হবিগন্জে যেখানে মাইনর কোন অপারেশনের ব্যবস্থা ছিলনা,  সেখানে ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদ ক্লিনিক স্থাপন করেন। যার নাম ছিল 'আহমদ ক্লিনিক'। আহমদ ক্লিনিকে হবিগন্জের মানুষের অপারেশনের সমস্যা অনেকটাই সুফল বয়ে আনে। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। আওয়ামীলীগের তরুণ কর্মীদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে তরুণ নেতাকর্মীদের আইডল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন।
১৯৬৯ সালে ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদকে হবিগন্জ পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মনোনিত করা হয়। পাকিস্থানী  হায়েনাদের হাতে শাহাদাৎবরণ করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি ওই পদে বহাল ছিলেন। ১৯৪১ সালে ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদ জন্ম গ্রহন করেন।  তাঁর পিতা  বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী আলহাজ্ব  মওলানা  রফিক উদ্দিন আহমেদ। মাতা মোছাম্মদ আশারাফুন্নেছা। ৮ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। 
ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদের এক বন্ধু ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলার আহমদাবাদ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আব্দুল হামিদ তালুকদার। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতাও করতেন। তিনি জীবিত কালীন সময়ে ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা,  দূরদর্শিতা  আর বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধ সম্পন্ন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী সম্পর্কে প্রাশয়ই আলোচনায় নিয়ে আসতেন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে যখন নিরস্ত্র নিরীহ মানুষ দেশ ছেড়ে ভারতের দিকে যাত্রা শুরু করে,  মুক্তিযোদ্ধারা প্রশিক্ষণের জন্য ভারতমুখী, তখনও ডাঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদ হবিগন্জে কন্টোলরুমের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। পাকসেনাদের আগমন বার্তা সার্বক্ষণিক তাঁকেই রাখতে হতো। পাক সেনারা যখন হবিগন্জের খুব কাছাকাছি সংবাদ পান তখনই মনস্থির করেন সীমান্ত অতিক্রম করতে হবে। কিন্তু ভাবতে পারেননি হায়েনাদের দল অল্প সময়ের মধ্যে শায়েস্থাগন্জ এলাকায় চলে আসতে পারে। 


চিকিৎসকদের নামের তালিকায় ৭২ নম্বরে ডাঃ সালেহ উদ্দীনের নাম রয়েছে/ছবি : সংগৃহীত 

২৯ এপ্রিল তিনি ও তাঁর অপর সহযোগী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হীরেন্দ্র রায় চৌধুরী একটি ট্রাক যোগে শায়েস্থাগন্জ ফাঁড়ি পথ ধরে চুনারুঘাট সীমান্তের দিকে রওয়ানা হন, তখন শায়েস্থাগন্জ রেল ক্রসিং-এ পাকিস্থানী সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েন। তাঁদেরকে শায়েস্থাগন্জ হাই স্কুলে আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। পরে লস্করপুর রমজান আলীর বাড়ীর একটি ব্যাংকারে তাঁদের গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় পাকিস্থানী সৈন্যরা তাদের ট্রাক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিয়ে যাওয়া খাদ্য, অর্থ পেয়ে ধরে নেয় এরা উভয়ই আওয়ামীলীগের এবং মুক্তিযুদ্ধের নেতৃস্থানীয়। যে কারনে নির্যাতন যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি নির্মমভাবে হত্যা করে একটি ব্যাংকারে মাটি চাপা দিয়ে রাখে।
স্বাধীনতার পর লস্করপুর ব্যাংকার থেকে ডাঃ সালেহ ও হীরেন্দ্র চৌধুরীর বিকৃত দেহ তুলে আনেন স্বজন পরিজন। ডাঃ সালেহ উদ্দীনকে দাফন করা হয় তাঁর গ্রামের বাড়ী নিজামপুরে পারিবারিক কবরস্থানে আর হীরেন্দ্র চৌধুরীর মরদেহ ধর্মীয় বিধানমতে দাহ করেন তাঁর স্বজনেরা। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় হবিগন্জে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দুই সংগঠকের এখনো স্থান হয়নি শহীদ তালিকায়। স্বাধীনতার প্রাক্কালে হবিগন্জের এই দুই জন স্বাধীনতার অকুতোভয় বীর সন্তানদের কেউ আজ স্মরণ করেনি, নেয়নি কোন খোঁজ। তাদেঁর নাম শহীদ তালিকায় অর্ন্তভূক্ত হয়নি আজো। মেডিকেল ছাত্র স্মৃতি ফলকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসকদের নামের তালিকায় ৭২ নম্বরে ডাঃ সালেহ উদ্দীনের নাম রয়েছে।
এভাবেই আমাদের সূর্য সন্তানদের বীরত্বগাঁথা অতল গহ্বরে হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁদের বীরত্বগাঁথা তুলে ধরতে চাই।  শহীদ তালিকায় তাদেঁর নাম অন্তর্ভূক্তি করার দাবীও জানাই। 
স্বাধীনতা যুদ্ধের সফল সংগঠকদ্বয়কে শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় আগামী প্রজন্ম যেন ভুলে না যায় , তাঁদের সেই ত্যাগের কথা, বাঙ্গালী, বাংলার স্বাধীনতা অর্জনের  গৌরবগাঁথা  ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা।



নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

ভেঙ্গে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে : মিফতাহ্ সিদ্দিকী

ভেঙ্গে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে : মিফতাহ্ সিদ্দিকী